গুলশান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থনীতি?
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
গুলশান হামলায় এখনো স্তব্ধ হয়ে আছে গোটা দেশ। নিরপরাধ মানুষের মৃত্যুতে সকলেই শোকাতর। কিন্তু আরো দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, দেশের বিভিন্ন খাতে এর সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এ থেকে বাদ যাবে না দেশের অর্থনীতিও। এমনটাই আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এমন শঙ্কা প্রকাশ করেন।
তারা বলছেন, সন্ত্রাসী বা জঙ্গি হামলা ক্রমাগত ঘটতে থাকলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। ফলে বিদেশী উদ্যোক্তারা এ দেশে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হবে না। বাংলাদেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়া বিদেশী উচ্চ শিক্ষার পথও রুদ্ধ হয়ে যাবে। এম্নকি বাংলাদেশ থেকে দেশগুলো শ্রমিক নেওয়াও হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে। যা কোনভাবেই দেশের জন্য সুফল বয়ে আনবে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, প্রভাব পড়ার বিষয়টি সুস্পষ্ট। রানা প্লাজা ট্রাজেডির পর থেকে আমাদের রফতানি খাত একটি ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের পরামর্শ মোতাবেক কাজ চলছে। অনেকেই এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। তবে অনেকেই চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় রফতনি খাত সাংঘাতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, এর আগে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের পরও বায়াররা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন। এখন বিদেশি ক্রেতারা দেশে আসতে চাইবেন না। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তাদের অনাস্থা বেড়ে যাবে। এখন হয়তো এমন হতে পারে বিদেশে গিয়েই বায়ারদের সাঙ্গে মিটিং করতে হবে।
আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, এতে যা ক্ষতি হয়েছে এটা কোনোভাবেই পুষিয়ে আনা সম্ভব নয়। এর ফলে আন্তর্জাতিকভাবে একটা সুদূর প্রসারী প্রভাব পড়বে।
বিজিএমইএয়ের সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, এটা আসলেই অনেক খারাপ একটা ঘটনা। এ ধরণের ঘটনার প্রভাব পড়বে কি না এই চিন্তার আগে বৈশ্বিকভাবে এর মোকাবেলা করতে হবে। ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা দেশে আর ঘটবে না এটা বিশ্ববাসীর কাছে নিশ্চিত করতে হবে।
জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলি হায়দার চৌধুরী বলেন, আমি মনে করি জনশক্তি রফতানিতে এই ঘটনা খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। কারণ আমাদের জনশক্তি রফতানির বাজার ট্রেডিশনাল। অর্থাৎ মূলত আমাদের বাজার মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক।
তবে স্টুডেন্ট ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এই ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আগের চেয়ে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ বেড়ে যাবে। ইউরোপ বা পশ্চিমা দেশগুলোতে এ ধরণের ভিসা প্রাপ্তি আরো কঠিন হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া